বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (UNO) একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ। তিনি মূলত উপজেলার সব প্রশাসনিক কার্যক্রম দেখাশোনা এবং পরিচালনা করেন। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ইউএনও-এর পদটি সম্মানজনক এবং বেশ আকর্ষণীয় হিসেবে বিবেচিত।
অনেকেই জানতে চান ইউএনও হওয়ার যোগ্যতা, বেতন কাঠামো, সুযোগ-সুবিধা ও দায়িত্ব সমূহ কি কি রয়েছে। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিতভাবে এসব তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব।ট
ইউ এন ও এর পূর্ণরূপ কি
ইউএনও (UNO) এর পূর্ণরূপ হচ্ছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (Upazila Nirbahi Officer)। এটি হলো বাংলাদেশ সরকারের মাঠপর্যায়ের প্রশাসনের একটি অত্যন্ত ক্ষমতাধর ও কার্যকর পদবি। এটি বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনিক কাঠামোর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাংলাদেশের উপজেলা পর্যায়ের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং সরকারের একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি। তিনি হলেন একটি উপজেলার প্রধান নির্বাহী কর্তা
ইউএনও কোন ধরনের পদ?
সাধারণত এটি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন ক্যাডারের একটি পদ। সাধারণত ৬ষ্ঠ গ্রেডের বা তার উপরের কর্মকর্তারা এই পদে দায়িত্ব পালন করেন। বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর সহকারী কমিশনার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে, অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে উচ্চ পদে পদোন্নতি পেয়ে তারা UNO হিসেবে নিয়োগ পান।
ইউএনও এর বেতন কত
২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী, একজন ইউএনও ৬ষ্ঠ গ্রেডে বেতন পান। এই গ্রেডের বেতন স্কেল ৩৫,৫০০ টাকা হলেও, প্রতি বছর তিনি ৫% ইনক্রিমেন্ট পান। ফলে তার মূল বেতন শুরু থেকেই বাড়তে থাকে। সাধারণত, এই পদে আসতে একজন কর্মকর্তাকে ৫ থেকে ৬ বছর বা তার থেকে কিছুটা কম বা বেশি সময় লাগতে পারে।
মূল বেতনের সাথে কিন্তু বাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য ভাতা আছে সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলঃ
- মুল বেতন: ৩৫,৫০০ /- টাকা
- বাড়িভাড়া ভাতা: ১৫,৯৭৫/- টাকা
শহরের ওপর ভিত্তি করে বাড়ি ভাড়া ভাতা ভিন্ন হয়। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকার জন্য এটি ৬০%। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এবং সাভার এলাকার জন্য ৫০%। অন্যান্য সকল স্থানের জন্য এই হার ৪৫%।
- মেডিকেল ভাতাঃ ১৫০০/- টাকা
- মোবাইল ফোন ভাতা: ১০০০/- টাকা
- আবাসিক টেলিফোন এনক্যাশমেন্ট ভাতা: ১২০০/- টাকা।
- শিক্ষা ভাতা: ১০০০/- টাকা ( দুই সন্তানের জন্য।
ইউএনও এর মোট বেতন ভাতাদি= (৩৫,৫০০+১৫,৯৭৫+১৫০০+১০০০+১২০০)=৫৫,১৭৫ টাকা।
জেন নিনঃ ১৬ তম গ্রেডের পেনশন কত ?
ইউএনও হওয়ার যোগ্যতা ও প্রক্রিয়া
কেউ সরাসরি ইউএনও হিসেবে নিয়োগ পান না; বরং এটি কর্মজীবনের একটি নির্দিষ্ট ধাপ। ইউএনও হওয়ার জন্য মূলত তিনটি ধাপে যোগ্যতা অর্জন করতে হয়:
ধাপ ১: প্রাথমিক একাডেমিক যোগ্যতা
ইউএনও হওয়ার প্রথম ধাপ হলো বিসিএসপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া এবং প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া। এর জন্য যে যোগ্যতাগুলো লাগে:
- শিক্ষাগত যোগ্যতা: যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমপক্ষে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে।
- ফলাফল: সাধারণত ফলাফলের ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট সিজিপিএ চাওয়া হয় না, তবে ডিগ্রিটি অবশ্যই বৈধ হতে হবে।
- নাগরিকত্ব: অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
- বয়সসীমা: বিসিএস পরীক্ষার সার্কুলার অনুযায়ী বয়স হতে হবে ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে (মুক্তিযোদ্ধা কোটা বা অন্যান্য বিশেষ কোটার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩২ বছর)।
ধাপ ২: বিসিএস পরীক্ষায় সফল হওয়া
আবেদন করার পর প্রার্থীকে বিসিএস পরীক্ষার তিনটি ধাপ সফলভাবে অতিক্রম করতে হয়:
- প্রিলিমিনারি পরীক্ষা: MCQ পদ্ধতির এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়।
- লিখিত পরীক্ষা: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। প্রশাসন ক্যাডারের জন্য এখানে উচ্চ স্কোর করতে হয়।
- মৌখিক পরীক্ষা: ব্যক্তিত্ব, সাধারণ জ্ঞান এবং তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তা যাচাই করা হয়।
প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার জন্য সাধারণত মেধা তালিকায় প্রথম দিকে থাকতে হয়, কারণ এটি বিসিএস ক্যাডারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ।
ধাপ ৩: কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা ও পদোন্নতি
বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরই কেউ ইউএনও হয়ে যান না। এটি সময় এবং অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভরশীল:
| ধাপ | পদবি | সময়কাল (আনুমানিক) | যোগ্যতা |
|---|---|---|---|
| ১ম স্তর | সহকারী কমিশনার | ৫ থেকে ৭ বছর | বিসিএস পরীক্ষায় সফল হওয়ার পর এই পদে যোগ দিতে হয়। |
| ২য় স্তর | সিনিয়র সহকারী কমিশনার | ২ থেকে ৩ বছর | নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণ ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন। |
| চূড়ান্ত লক্ষ্য | উপজেলা নির্বাহী অফিসার (UNO) | ৮ থেকে ১১ বছরের অভিজ্ঞতা | সিনিয়র সহকারী কমিশনার পদ থেকে পদোন্নতি বা পদায়নের মাধ্যমে এই দায়িত্ব পান। এই সময়ে দক্ষতা, সততা এবং নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতা প্রমাণ করতে হয়। |
ইউএনও হওয়ার পথটি শুরু হয় কঠোর অধ্যবসায় ও মেধার মাধ্যমে বিসিএস পরীক্ষায় সফল হওয়ার মধ্য দিয়ে এবং শেষ হয় প্রশাসন ক্যাডারে বহু বছরের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সততা প্রমাণের মাধ্যমে।
ইউএনও এর কাজ কি
ইউএনও হলেন একটি উপজেলার প্রধান অভিভাবক বা সরকার প্রধানের স্থানীয় প্রতিনিধি। তাঁর কাজ হলো উপজেলায় সরকারের সব নির্দেশ সঠিকভাবে পালন হচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করা। ইউএনও এর দায়িত্ব ও ক্ষমতা অনেক বিস্তৃত। তাঁর মূল কাজগুলোকে কয়েকটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়:
১. প্রধান প্রশাসনিক ও নির্বাহী ক্ষমতা
ইউএনও হলেন উপজেলা প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু। তাঁর কাজ মূলত নির্বাহী ক্ষমতার প্রয়োগ করা:
- উপজেলার প্রধান নির্বাহী: তিনি উপজেলার সব সরকারি দপ্তরের কাজ তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ করেন। উপজেলার সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাধ্যমে সমন্বিতভাবে কাজ করেন।
- আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ: তিনি উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কাজ করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বাজারে ভেজাল প্রতিরোধ, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করেন।
- সরকারি সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ: উপজেলার সরকারি খাসজমি, পুকুর, এবং অন্যান্য সম্পত্তি দেখভাল করা তাঁর প্রধান দায়িত্ব।
২. উন্নয়নমূলক কাজ ও সমন্বয় সাধন
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ মাঠ পর্যায়ে সফলভাবে বাস্তবায়ন করাই ইউএনও’র অন্যতম প্রধান লক্ষ্য:
- উন্নয়ন প্রকল্পের তদারকি: সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প যেন স্বচ্ছতার সাথে এবং নির্দিষ্ট মান বজায় রেখে শেষ হয়, তা নিশ্চিত করেন।
- সমন্বয়কারী: উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে সরকারি কর্মকর্তাদের কাজের সমন্বয় করেন, যাতে কোনো কাজে যেন দ্বৈততা বা জটিলতা তৈরি না হয়।
- শিক্ষা ও স্বাস্থ্য: উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মানোন্নয়ন, ঝরে পড়া রোধ এবং টিকাদান কার্যক্রমের তদারকি করেন।
৩. দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতিতে ভূমিকা
প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে ইউএনও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন:
- দুর্যোগ মোকাবিলা: বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, বা মহামারীর মতো দুর্যোগের সময় তিনি উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতৃত্ব দেন।
- ত্রাণ বিতরণ: সরকারিভাবে আসা সব ত্রাণসামগ্রী যেন প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে পৌঁছায়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
৪. জনকল্যাণ ও সামাজিক নিরাপত্তা
তিনি সরাসরি জনগণের বিভিন্ন সমস্যা শোনেন এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন:
- সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি: বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিএফ/ভিজিডি কর্মসূচির তালিকা প্রণয়ন ও বিতরণে সহযোগিতা করেন।
- জনসংযোগ: নিয়মিতভাবে জনগণের অভিযোগ শোনেন এবং স্থানীয় ছোটখাটো বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করেন, যাতে মানুষ দ্রুত বিচার পেতে পারে।
ইউএনও হলেন সরকারের হাত, চোখ এবং কান। তিনি উপজেলায় সরকারের সকল নীতি, আইন ও জনকল্যাণমূলক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দিনরাত কাজ করেন। তাঁর দক্ষতার ওপরই নির্ভর করে একটি উপজেলার প্রশাসনিক গতিশীলতা ও জনগণের সন্তুষ্টি।
ইউএনও এর সুযোগ-সুবিধা
ইউএনও অর্থাৎ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর সুযোগ-সুবিধাগুলো সত্যিই অনেক আকর্ষণীয় এবং সরকারি পদমর্যাদা অনুযায়ী অনেক শক্তিশালী। একজন ইউএনও শুধু বেতনই পান না, তিনি এমন কিছু ক্ষমতা এবং সুবিধা পান যা তাঁর জীবনযাত্রা এবং সামাজিক অবস্থানকে উন্নত করে।
ইউএনও পদটি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন ক্যাডারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ। ৫ম গ্রেডের এই কর্মকর্তা সাধারণত নিম্নলিখিত সুবিধাগুলো ভোগ করে থাকেন:
১. আর্থিক ও বেতন সংক্রান্ত সুবিধা
আর্থিক নিরাপত্তা হলো ইউএনও পদের মূল আকর্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম:
- উচ্চ বেতন স্কেল (Grade 6): ইউএনও পদটি ৫ম গ্রেডের হওয়ায় তিনি উচ্চ বেতনের অধিকারী হন। জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ অনুযায়ী, মূল বেতন শুরু হয় ৩৫,৫০০/− টাকা থেকে।
- বিশেষ ভাতা ও অতিরিক্ত সুবিধা: বেসিক বেতনের বাইরে ইউএনও হিসেবে তিনি বিশেষ দায়িত্ব ভাতা, আপ্যায়ন ভাতা এবং অন্যান্য প্রশাসনিক ভাতা পান, যা তাঁর মাসিক আয়কে আরও বাড়িয়ে তোলে।
- উৎসব ও নববর্ষ ভাতা: অন্যান্য সরকারি কর্মচারীর মতো বছরে দুটি উৎসব ভাতা (মূল বেতনের ১০০%) এবং বাংলা নববর্ষে বৈশাখী ভাতা (মূল বেতনের ২০%) পান।
- গোপনীয় ফান্ড: উপজেলায় বিভিন্ন জরুরি প্রশাসনিক বা গোয়েন্দা কাজে ব্যবহারের জন্য তিনি একটি নির্দিষ্ট অংকের গোপনীয় ফান্ড ব্যবহারের সুযোগ পান।
২. আবাসন ও যাতায়াত সুবিধা
ইউএনও-এর জীবনযাত্রা সুবিধাজনক করার জন্য সরকার কিছু বিশেষ ব্যবস্থা করে থাকে:
- সরকারি বাসভবন: ইউএনও পদাধিকারবলে প্রতিটি উপজেলা সদরে সুসজ্জিত সরকারি বাসভবন পান। এই বাসভবন তাঁর পদমর্যাদার প্রতীক এবং সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দ্বারা সুরক্ষিত থাকে।
- সরকারি গাড়ি ও চালক: যাতায়াতের জন্য তিনি সরকারি গাড়ি এবং একজন স্থায়ী সরকারি চালক পান। গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ এবং জ্বালানির খরচ সরকার বহন করে।
- নিরাপত্তা ব্যবস্থা: আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে ইউএনও-কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়। তিনি সরকারি বাসভবন এবং দাপ্তরিক কাজে পুলিশি নিরাপত্তা সুবিধা পান।
৩. ক্ষমতা, মর্যাদা ও সামাজিক অবস্থান
ইউএনও-এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো তাঁর ক্ষমতা এবং সামাজিক অবস্থান:
- উপজেলার প্রধান কর্তা: তিনি উপজেলার প্রধান নির্বাহী কর্তা হওয়ায় তাঁর ক্ষমতা উপজেলায় কর্মরত প্রায় সব দপ্তরের কর্মকর্তাদের ওপরে থাকে।
- ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষমতা: তিনি উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার ক্ষমতা রাখেন। এটি তাঁকে স্থানীয়ভাবে দুর্নীতি, ভেজাল ও অনিয়ম দ্রুত দমনের সুযোগ করে দেয়।
- সামাজিক সম্মান: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইউএনও পদটি অত্যন্ত সম্মানজনক। স্থানীয় জনগণ ও জনপ্রতিনিধিরা তাঁর ক্ষমতা ও পদমর্যাদার জন্য তাঁকে বিশেষ শ্রদ্ধা করেন।
- সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা: উপজেলার উন্নয়নমূলক বা জরুরি যেকোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা তাঁর হাতে থাকে, যা তাঁকে সমাজে একজন অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।
৪. পেশাগত ও ভবিষ্যৎ সুবিধা
চাকরি জীবনের বাইরেও ইউএনও পদটি দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হওয়ায় ইউএনও হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালনের পর তিনি উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব এবং সর্বোচ্চ সচিব পর্যন্ত পদোন্নতি পাওয়ার সুযোগ পান।
সরকারি চাকরিতে থাকায় অবসর গ্রহণের পর তিনি নিয়মিত মাসিক পেনশন এবং মোটা অংকের এককালীন গ্র্যাচুইটি পান, যা জীবনের শেষ প্রান্তে আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। ইউএনও-রা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন উচ্চমানের প্রশাসনিক প্রশিক্ষণ ও ফেলোশিপে অংশগ্রহণের সুযোগ পান, যা তাঁদের পেশাগত দক্ষতা বাড়ায়।
মোটকথা, ইউএনও পদটি শুধু একটি চাকরি নয়, এটি ক্ষমতা, নিরাপত্তা, উচ্চ সামাজিক মর্যাদা এবং একটি অত্যন্ত দায়িত্বশীল জীবনযাত্রার প্যাকেজ।






